মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহায়তা করতেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজাকাররা জুন-জুলাইয়ের দিকে ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি ক্যাম্প করে। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করায় রাজাকাররা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। টর্চার সেলে নির্যাতনের পর তারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে।
হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত রাজাকার নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলকে গত সোমবার রাতে ঢাকার দক্ষিণখান ও আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই আসামি পলাতক ছিল। গতকাল মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীর ছেলে ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের আদালতে নকিব ও মোখলেছসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। ২০১৭ সালে ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নকিব ও মোখলেছের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের
অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত সংস্থা তারাসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের মধ্যে দু’জন রায়ের আগে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে। গত ২৩ জানুয়ারি নকিব ও মোখলেসসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। নকিব ও মোখলেছুরের বাড়ি ত্রিশালে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৫ সালে মামলা হওয়ার পর থেকে নকিব পলাতক ছিল। সে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিচালিত ত্রিশাল এলাকায় স্থানীয় রাজাকার বাহিনী গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। মোখলেছও ২০১৫ সাল থেকে পলাতক ছিল।