ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে।
সোমবার পশ্চিম জাভায় উৎপত্তি হওয়া ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পটি ৭৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানী জাকার্তায়ও অনুভূত হয়েছে।
দেশটির জিওফিজিক্স এজেন্সি (বিএমকেজি) জানিয়েছে, পশ্চিম জাভার সিয়ানজুড় শহরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীর ভূমিকম্পটির উৎপত্তি। এতে সুনামির কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়নি।
দুর্যোগ সংস্থা বিএনপিবি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, ৪৬ জন নিহত এবং প্রায় ৭০০ জন আহত হয়েছে।
সিয়ানজুড় থেকে সরকারি কর্মকর্তা হেরমান সুহেরমান নিউজ চ্যানেল মেট্রোটিভিকে জানান, ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে কিছু লোক আটকা পড়ে আছে।
একটি হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় কয়েকশ লোককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, নিউজ চ্যানেলটির ফুটেজে এমনটি দেখা গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি জাকার্তায় কয়েক সেকেন্ড ধরে অনুভূত হয়েছে। এ সময় নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকার দপ্তরগুলো থেকে কিছু লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়।
জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, সিয়ানজুড় এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ও একটি মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যোগাযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত জানতে কর্মকর্তারা অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছেন।
মেট্রোটিভি থেকে পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, সিয়ানজুড়ের বেশ কিছু ভবন প্রায় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাইরে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন।
ভূমিকম্পের সময় সিয়ানজুড়ে উপস্থিত থাকা মুহলিস নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি ‘বিশাল কম্পন’ অনুভব করেন এবং তার দপ্তরের দেয়াল ও সিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লোকজন তাদের ঘরবাড়ি থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে আসে, কেউ অজ্ঞান হয়ে যায় এবং কিছ লোক বমি করতে থাকে।
“আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। আরেকটি ভূমিকম্প হতে পারে বলে আমার আশঙ্কা হচ্ছিল,” মেট্রোটিভিকে বলে মুহলিস।
বিএমকেজি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর থেকে পরবর্তী দুই ঘণ্টায় ২৫টি পরাঘাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারি বৃষ্টি হলে ভূমিধসের সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেছে তারা।
প্রায় ২৭ কোটি মানুষের দেশ ইন্দোনেশিয়া তথাকথিত ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলার’ (প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার) ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এ অঞ্চলটিতে ভূত্বকের কয়েকটি পৃথক টেকটোনিক প্লেট এসে মিলিত হওয়ায় এখানে ঘন ঘন ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাতের মতো ঘটনা ঘটে।