চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যানে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা ও চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিপ্লবী উদ্যান চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের ঐতিহ্য কৃষ্টিকে ধ্বংস করে উন্মুক্ত স্থানে বাণিজ্যিক অবকাঠানো নির্মাণ সম্পূর্ণ অবৈধ। জনপ্রতিনিধি বা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে জনগণ চেয়ারে বসিয়েছে চট্টগ্রামের পার্ক কিংবা উন্মুক্ত স্থান দখল ইট কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণের জন্য নয়।
বক্তারা আরো বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে বিপ্লবী উদ্যান ঘেরাও দিয়ে মাটি খনন করে যে নতুন অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বক্তারা আরো বলেন, উদ্যানে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের জন্য বিদ্যমান ফোয়ারা ও গ্লাস টাওয়ার ভাঙা হচ্ছে। এই চত্বরে অনুষ্ঠান করার জন্য অস্থায়ী উন্মুক্ত মঞ্চের ব্যবস্থা করবে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। শুধু তা-ই নয়, নতুন চুক্তি অনুযায়ী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি উদ্যানে বিলবোর্ড, মেগাসাইন, এটিএম বুথ, কিয়স্ক, প্রদর্শনী কেন্দ্র, কিডস এক্সপেরিয়েন্স বা গেমিং জোন ইত্যাদি স্থাপন করতে পারবে। যা জনস্বার্থ বিরোধী।
মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার চট্টগ্রাম সমন্বয়ক মনিরা পারভিন, চট্টগ্রাম ইতিহাস সাংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য সুফিক আনোয়ার মো. মোর্শেদ রাশেদুল আজিজ প্রমুখ।
১৯৭৯ সালে ব্যস্ততম চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেটে গাছগাছালিতে ভরা দুই একরের এই উদ্যান গড়ে তোলা হয়। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী প্রীতিলতা স্মৃতিতে এই উদ্যান নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, উদ্যানে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশের বেশি কংক্রিট অবকাঠামো থাকতে পারবে না। আর আন্তর্জাতিকভাবে ২ শতাংশও অনুমোদন করে না। কিন্তু চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানের কংক্রিট অবকাঠামোর পরিমাণ অন্তত ৫৫ শতাংশ।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর করা জরিপে উদ্যানের এই দশা জানা যায়। এখন সেখানে আবার স্থাপনা করা হলে উদ্যানে উন্মুক্ত পরিসর ও সবুজ পরিবেশ বলে কিছুই থাকবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।