কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের জারানওয়ালা শহরে ৫টি চার্চ ও এর নিকটবর্তী অনেক বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
পাঞ্জাব প্রাদেশিক পুলিশের মহাপরিদর্শক ওসমান আনোয়ার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর আলজাজিরার।
বুধবার (১৬ আগস্ট) জারানওয়ালার খ্রিস্টান অধ্যুষিত ইসা নগরিতে হামলা চালায় একদল উন্মত্ত জনতা। এ সময় শহরের বৃহত্তম গির্জা হিসেবে পরিচিত স্যালভেশন আর্মি চার্চসহ ওই এলাকার ৫টি গির্জা এবং খ্রিস্টানদের বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়।
পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের তথ্যমন্ত্রী আমির মির বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় জানান, সহিংসতার ওই ঘটনার পর ইসা নগরির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েক ওই এলাকায় কয়েক হাজার পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে।
‘এটা ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক একটি নাশকতা। সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে,’ টুইটারে এর বেশি কিছু আর কিছু বলেননি মির।
জারানওয়ালায় হামলার শিকার একটি চার্চের কাছেই বসবাস করতেন ৪৭ বছর বয়সী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ফারুক মাসিহ; তার পেশা ট্রাকে রং করা। ইসা নগরির অন্য অনেকের মতো মাসিহর বাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আলজাজিরাকে মাসিহ বলেন, ‘তারা আমার পুরো বাড়ি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দিয়েছে। কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। এমনকি বসার মতো একটি চেয়ারও নেই। সব ছাই হয়ে গেছে।’
‘আমি, আমার ৩ ভাইসহ পরিবারের মোট ১৯ জন সদস্য বাড়িটিতে থাকতাম। এখন আমরা কী করব, কোথায় যাব…কিছুই জানি না। খোদার ওপর ভরসা করা ছাড়া আর কিছুই এখন করার নেই।’
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘জারানওয়ালার ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার ঘৃণ্য চেষ্টা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাকিস্তানের এই নাশকতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।