সড়ক যোগাযোগে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের অপেক্ষায় ঢাকাবাসী। দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ। এ পথ ব্যবহার করে গাড়ি চালিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের কাওলা থেকে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেটে আসা যাবে মাত্র ১২ মিনিটে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। পরের দিন অর্থাৎ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এ উড়াল সড়ক। তবে এ মুহূর্তে ফার্মগেট থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, নামা যাচ্ছে তেজগাঁও কলেজের সামনের সড়কে।
যে শহরের মানুষ অতিরিক্ত যানবাহনের জটের কারণে ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাতে অভ্যস্ত। যানজটের সেই নগরীতেই এ পথ দিয়ে গাড়ি চলবে ৬০ কিলোমিটার বেগে। বিমানবন্দর থেকে বনানী, বিজয় সরণি দিয়ে ফার্মগেট আসতে রাস্তায় যে তীব্র যানজটে অসহ্য সময় পার করতে হতো, সেটি লাঘব করবে নতুন এ উড়াল সড়ক।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার জানান, বিমানবন্দর থেকে শুরু করে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটারের অংশটুকু যেতে আমাদের সর্বোচ্চ ১২ মিনিট সময় লাগবে। যদি নিচের কিছু ট্রাফিক ওপরে চলে আসে, তাহলে নিচের রাস্তাটা কিন্তু অনেকটা খালি হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নিচের যানজট অনেকটা কমে যাবে। একই পথে দুটি সড়ক হওয়াতে ব্যবহারকারীরা পছন্দ মতো সড়কে চলাচল করতে পারবেন।
এ প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে কাওলা থেকে ফার্মগেট-তেজগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত যেতে ১০-১১ মিনিট সময় লাগবে। এ পথে অনেক যাত্রী আসা-যাওয়া করবেন। এর সুফল অবশ্যই পাবেন রাজধানীবাসী। এর সঙ্গে মেট্রোরেল যখন মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হবে, তখন সুফল অনেক বেড়ে যাবে। ঢাকা আরও আধুনিক শহরে রূপ নেবে। যান চলাচল আরও সহজ হবে।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা শিকদারের সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রান্ত থেকে ফার্মগেট প্রান্ত পর্যন্ত অংশের উভয় দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা (টু ও থ্রি-হুইলার) এবং পথচারী চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর যেকোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো এবং যানবাহন থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। ওঠা-নামার র্যাম্পের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে নিচের পথগুলো দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা-নামা করা যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফার্মগেট অভিমুখী যানবাহনগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা, প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব থেকে উঠবে। আর বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে ও ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পাশে গিয়ে নামবে।
এ ছাড়া বিমানবন্দরের দিকে যাওয়া যানবাহনগুলো বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর এবং দক্ষিণ লেন ও বনানী রেলস্টেশনের সামনে থেকে উঠতে পারবে। মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের সামনে বিমানবন্দর সড়ক, কুড়িল বিশ্বরোড ও বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনে গিয়ে নামতে পারবে।